ইহুদিরা কেন এত শক্তিশালী? কেন এত বুদ্ধিমান? কেন এত উন্নত?

ইহুদীরা কেন এত মেধাবী?

বর্তমান বিশ্বে কার আধিপত্য বেশি? এই প্রশ্ন টা করলেই আপনি হয়তো খুব সহজেই উত্তর দিবেন, কে আবার? আমেরিকা! তাই নয় কি? আর আমেরিকা কার বুদ্ধিতে চলে? এই পোস্ট টা পড়লেই বুঝতে পারবেন।

ইহুদিরা মেধাবী এবং বুদ্ধিমান হওয়ার কারণ কী?; ইহুদী ' রা কেন বুদ্ধিমান হয়?

অনেকেই আবার তাদেরকে হাই প্রোফাইল সমৃদ্ধ জাতি মনে করেন; না জানার কারনে আমাদের অনেক মুসলিম ভাইয়েরাও তাই মনে করেন।

আজ তার বিস্তারিত জেনে নিবো।

ইহুদিরা-কেন-এত-মেধাবী-বুদ্ধিমান

ইহুদিরা কেন নোবেল পুরস্কার এর দিক দিয়েও এগিয়ে আছে?

আপনি হয়তো জানেন কার্ল মার্ক্স, সিগমুন্ড ফ্রয়েড,আইনস্টাইন থেকে শুরু করে বর্তমান বিশ্বে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ পর্যন্ত জন্মগতভাবে এরা সবাই ইহুদী। ইহুদী জাতির মধ্য থেকে যত নোবলজয়ী মানুষ জন্মেছে আর কোনো জাতির মধ্যেই কিন্তু এমন হয় নি। নিচের লিস্ট থেকে নোবেল প্রাইজ জয়ের পেছনে ইহুদী জাতির অবদান দেখুন:

  • ফিজিক্সএ ৫১ টি নোবেল পুরস্কার (ফিজিক্স নোবেলের ২৬%)
  • কেমিস্ট্রি তে ৩৬ টি নোবেল পুরস্কার (কেমিস্ট্রি নোবেলের ২০%)
  • মেডিসিন বা ফিজিওলজি তে ৫৫ টি নোবেল পুরস্কার (মেডিসিন নোবেলের ২৬%)
  • অর্থনীতি তে ২৯ টি নোবেল পুরস্কার (অর্থনীতি নোবেলের ৩৮%)
  • শান্তিতে (পিস) ৯ টি নোবেল পুরস্কার( পিস্ নোবেলের ৯%)
  • সাহিত্যে ১৪ টি নোবেল পুরস্কার ( সাহিত্য নোবেলের ১৩%)

কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো সারা দুনিয়ায় ইহুদিদের জনসংখ্যা মাত্র ১.৫ কোটির কিছু বেশী।

ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কেন বেশি ইহুদিদের?

বর্তমান বিশ্বে ৪ হাজারেরও বেশি টেক-কোম্পানি ইহুদীদের অধীনে রয়েছে; যেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর নাম। বিশ্বের সবচেয়ে প্রধান ৫০০টি টেক-জায়ান্টের ৮০টিরই গবেষণাকেন্দ্র এবং নব্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কেন্দ্র রয়েছে তাদের রাজধানী ইজরাইল এ! আদতে টেক-স্টার্টআপের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির ঠিক পরেই রয়েছে ইজরাইল এর রাজধানী তেল-আবিব এর নাম, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইসরায়েল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত টেক-কোম্পানিগুলোর শেয়ারের জন্য তৈরি ন্যাসড্যাক স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকায় ইসরায়েল রয়েছে ৩ নাম্বারে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র আর চীনই রয়েছে ইজরাইল এর উপরে। জার্মানি, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সের সম্মিলিত প্রযুক্তি কোম্পানির তালিকাও রয়েছে ইজরাইল এর পিছনে! ঠিক এই মুহূর্তে পরবর্তী মডেলের আইফোনের হার্ডওয়্যারের বেশিরভাগই তৈরি করা হচ্ছে ইজরাইল এ।

চীন হয়তো উৎপাদনের দিক থেকে এগিয়ে থাকতে পারে, কিন্তু নতুন প্রযুক্তি গবেষণা, আবিষ্কার আর তা বাস্তবে তৈরি করার দিক থেকে সবার উপরে রয়েছে ইজরেল। গুগলের নতুন প্রযুক্তিগুলোর অনেকগুলোই তৈরি করেছে এই ইহুদীরা। ইনটেল, বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রসেসর তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান, মাইক্রোচিপ নিয়ে গবেষণার জন্যও ইহুদী গবেষকদের মুখাপেক্ষী। ইজরাইল এর ইনটেল কারখানায় কাজ করে ১১ হাজারেরও বেশি কর্মী, যেটি দেশের অন্যতম বড় প্রযুক্তি কারখানা। বিল গেটসের মাইক্রোসফটকেও ধরা হয় একটি আধা-ইসরেলি কোম্পানি হিসেবে, অর্থাৎ আপনার কম্পিউটারে চালিত উইন্ডোজ সফটওয়্যারটি ডেভেলপ করতেও অবদান রয়েছে কোনো ইহুদী প্রযুক্তিবিদের।

ইহুদি'রা কেন এত শক্তিশালী?

সংখ্যায় কম হয়েও ইহুদি'রা কেন এত এগিয়ে? ইহুদিরা কেন এত শক্তিশালী? ইসরাইলকে বেষ্টন করে আছে ২১টি আরব দেশ, যার অনেকে এর অস্তিত্ব স্বীকার করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইহুদিদের বলা হয় সবচেয়ে শক্তিশালী জনগোষ্ঠী। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ভোট ব্যাংকের বড় অংশ ইহুদিরা। যুক্তরাষ্ট্রে মোট জনসংখ্যার ২.৩ শতাংশ অর্থাৎ ছয় থেকে সাত মিলিয়ন ইহুদি, যারা মোট সম্পদের ৫০ শতাংশের মালিক। এই জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশ বাস করে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে, যাদের বলা হয় ইলেকটোরাল কলেজ স্টেটস। উল্লেখ্য, ইহুদিদের ভোট সব সময় এক দিকে যায়। যারা তাদের জন্য কাজ করবে তাদের ভোট দেয়। তাই সহজেই ভোট দিয়ে নির্বাচন করতে পারে তাদের পছন্দমতো প্রেসিডেন্টকে। আবার এমনও দেখা যায়, যারা ইহুদি নয় কিন্তু ইহুদিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাদের সংখ্যা ধরলে ইহুদিরাই সবচেয়ে বড় ভোট ব্যাংক। এটা হলো অনানুষ্ঠানিক ইহুদি লবি, যা আনুষ্ঠানিক ইহুদি লবির অতিরিক্ত।

এত সব রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও আরো কিছু দিক দিয়ে তারা প্রভাবশালী। পৃথিবীতে এক কোটি ৪০ লাখ ইহুদি। এর মধ্যে ৭০ লাখ আমেরিকায়, ৫০ লাখ এশিয়ায়, ২০ লাখ ইউরোপে এবং এক লাখ আফ্রিকায়। পৃথিবীতে ইহুদি এবং মুসলিমদের অনুপাত ১ঃ১০০। অর্থাৎ একজন ইহুদির বিপরীতে এক শ’ জন মুসলিম। এর পরও মুসলিমদের চেয়ে কয়েক শ’ গুণ ক্ষমতাবান ইহুদিরা। এর কারণ হিসেবে বলা যায় সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সব দিক দিয়েই ইহুদিরা এগিয়ে।

টাইমস ম্যাগাজিনের জরিপে গত শতাব্দীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব এবং বিজ্ঞানী হলেন আলবার্ট আইনস্টাইন। যিনি একজন ইহুদি। সিগমন ফ্রেইড মনোবিজ্ঞানের জনক। তিনিও একজন ইহুদি। এ ছাড়া আছে অনেক স্বনামধন্য ইহুদি বিজ্ঞানী। যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশাল অবদান রেখেছে। বেনজামিন রুবিন (টিকার সুই), জোনাস স্যাক (প্রথম পোলিও টিকা), অ্যালার্ট সেবিন (রক্তস্বল্পতার প্রতিষেধক), বারুচ ব্লামবার্গ (হেপাটাইটিস-বি)। এ ছাড়া আছেন কার্ল মার্কস, পল স্যামুয়েলসন, মিল্টন ফ্রেইডম্যান, পল এহব্লিচ এবং আরো অনেকে।

ইহুদিরা কেন এত উন্নত?

ইহুদীরা এত উন্নত কেন? রহস্য কি? এই প্রশ্নের উত্তর বলতে চাই, ইহুদি' দের এই চরম সাফল্যের পেছনে তিনটি প্রধান কারন আছে। তার মধ্যে প্রথমটি হলোঃ 'শিক্ষা'; এটি তাদের ধর্মেরই একটি অঙ্গ। ওদের সফলতার দ্বিতীয় প্রধান কারন হলোঃ 'ট্রেড'; যার মানে 'চাকরি/কাজ/জীবিকা'। ইহুদিরা কেন এত উন্নত? তার তৃতীয় কারণ টি হলোঃ সেটি হচ্ছে 'ঐক্য' যাকে আপনি নেটওয়ার্কিংও বলতে পারেন।

মিডিয়াতেও ছড়িয়ে আছে ইহুদিরা।

জনপ্রিয় পত্রিকা, স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেলগুলোর উচ্চপদে আসীন আছেন তারা। উলফ ব্লিটজার (সিএনএন), বারবারা ওয়াল্টার (এবিসি নিউজ), ইউগেনা মেয়ার (ওয়াশিংটন পোস্ট), হেনরি গ্রুনওয়াল্ড (টাইম ম্যাগাজিনের চিফ এডিটর), ক্যাথেরিন গ্রাহাম (ওয়াশিংটন পোস্টের এডিটর), জোসেফ লিলিয়েল্ড (নিউইয়র্ক টাইমসের এক্সিকিউটিভ এডিটর), ম্যাক্স ফ্রাংকেন (নিউইয়র্ক টাইমস)।

বলিউডের বিখ্যাত অনেক প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতাও ইহুদি। বলিউডের প্রতিষ্ঠাতাও একজন ইহুদি। অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজকদের মধ্যে আছেন স্টিফেন স্পিলবার্গ, মেল ব্রুকস, ওলিভার স্টোন, এরোন স্পেলিং, নিল সিমোন, অ্যান্ড্রু ভেইনা, মাইকেল ম্যান, মিলোস, ফরম্যান, ডগলাস ফেয়ার ব্যাংকস ও আইভ্যান রিটম্যান।

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দাতাদের তালিকায় প্রথমে আছেন একজন ইহুদি জর্জ সোরোস। তিনি চার বিলিয়ন ডলার দান করেন যা ব্যয় হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বিজ্ঞানীদের গবেষণার কাজে।

ইহুদিদেরকে 'অভিশপ্ত জাতি' বলার কারণ কী?

ইহুদিদের অভিশপ্ত হওয়ার কারন আমার নিজের মুখে না শুনে আল্লাহ তাদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফ এ কি বলেছেন তা উল্লেখ করলাম। এখন আমাদের মধ্যের কিছু মুসলমানদের অবস্থা এত খারাপ হয়ে গেছে যে আল্লাহর কথার চেয়ে বিজ্ঞানের কথাকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়। আল্লাহ তা’আলা ইহুদিদের কথার প্রতিবাদ করে বলেনঃ

" নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা বলেছে আল্লাহ হচ্ছেন অভাবগ্রস্ত আর আমরা বিত্তবান। এখন আমি তাদের কথা এবং যে সব নবীকে তারা অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে তা লিখে রাখবো। অতঃপর বলব, আস্বাদন কর জ্বলন্ত আগুনের আযাব।(সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৮১)

পবিত্র কুরআন শরীফ এ আল্লাহ বলেন,

"হে রসূল, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না, যারা দৌড়ে গিয়ে কুফরে পতিত হয়; যারা মুখে বলেঃ আমরা মুসলমান, অথচ তাদের অন্তর মুসলমান নয় এবং যারা ইহুদী; মিথ্যাবলার জন্যে তারা গুপ্তচর বৃত্তি করে। তারা অন্যদলের গুপ্তচর, যারা আপনার কাছে আসেনি। তারা বাক্যকে স্বস্থান থেকে পরিবর্তন করে। তারা বলেঃ যদি তোমরা এ নির্দেশ পাও, তবে কবুল করে নিও এবং যদি এ নির্দেশ না পাও, তবে বিরত থেকো। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান, তার জন্যে আল্লাহর কাছে আপনি কিছু করতে পারবেন না। এরা এমনিই যে, আল্লাহ এদের অন্তরকে পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্যে রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং পরকালে বিরাট শাস্তি"।সুরা মায়েদা: ৪১

মহান আল্লাহ সুরা মায়েদা তে ইরশাদ করেনঃ

বনী-ইসলাঈলের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে দাউদ ও মরিয়মতনয় ঈসার মুখে অভিসম্পাত করা হয়েছে। এটা একারণে যে, তারা অবাধ্যতা করত এবং সীমা লংঘন করত। সুরা মায়েদা ৭৮

আল্লাহ তাআ’লা অন্য একজায়গায় ইহুদিদের সম্পর্কে বলেন;

"ইহুদীরা বলে ওযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র’। এ হচ্ছে তাদের মুখের কথা। এরা পূর্ববর্তী কাফেরদের মত কথা বলে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন, এরা কোন উল্টা পথে চলে যাচ্ছে?সুরা তাওবা, আয়াত: ৩০

আপনি জানেন কি?

বনি ইসরাইল জাতি হাজার হাজার নবীকে হত্যা করেছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি অপরাধ হল নবী হত্যা করা, নবী হত্যাকারীদের সবচেয়ে বড় শাস্তি হবে আখেরাতে। নবীরা হলেন আল্লাহর দুত। আমরা জানি আমাদের পৃথিবীতেও রাষ্ট্রদুত হত্যা করা মানে ঐ দেশের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল।

আরো জেনে নিনঃ

পবিত্র কুরআন শরীফ এ তাদের নামে বড় একটি সুরা আছে নাম বনি ইসরায়েল। আমাদেরকে আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরিফে তাদের অনেক কাহিনী বর্ননা করেছেন তানাহলে জানা সম্ভব হত না, উদ্দেশ্য আমরা যেন তাদের মত না হই।

কিছুদিন পরপরই উত্তেজনা চরম হয়ে যায় ফিলিস্তিনি এবং ইহুদীদের মধ্যে

কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি দল হামাস গাযা শাসন করে। গাযা এবং পশ্চিম তীরে, পূর্ব জেরুজালেম এ যে ফিলিস্তিনিরা থাকেন, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলিদের উত্তেজনা চরমে উঠে কিছুদিন পরপরই। ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের অনেকবার যুদ্ধ হয়েছে। গাযার সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল এবং মিশর, যাতে হামাসের কাছে কোন অস্ত্র পৌঁছাতে না পারে। গাযা এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা বলছে, ইসরায়েলের নানা পদক্ষেপ এবং কঠোর বিধিনিষেধের কারণে তারা খুবই দুর্দশার মধ্যে আছে। অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করে যে, ফিলিস্তিনিদের সহিংসতা থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য তাদের এই কাজ করতে হয়। চলতি বছরে এপ্রিলের মাঝামাঝি রমজানের শুরু থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তখন প্রায় প্রতি রাতেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। পূর্ব জেরুজালেম হতে কিছু ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি ফিলিস্তিনিদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।

Israel-palestine-problem

জাতি হিসেবে ইহুদীরা কেন এত বুদ্ধিমান?

ড. স্টিফেন কার লিওন এর লিখাঃ

অনুবাদকঃ আসিফ ইকবাল তারেক।

ইসরাইলের কয়েকটি হাসপাতালে তিন বছর মধ্যবর্তীকালীন কাজ করার কারনেই বিষয়টি নিয়ে গবেষনা করার চিন্তা আমার মাথায় আসে। এতে অমত করার কোনই সুযোগ নেই যে, ইহুদীরা ইঞ্জিনিয়ারিং, সংগীত, জ্ঞান বিজ্ঞানসহ জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অন্যদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে এবং বিশেষ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে। প্রসাধনী, খাদ্য, অস্ত্র, ফ্যাশন, ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি (হলিউড) ইত্যাদিসহ পৃথিবীর প্রায় সত্তর ভাগের কাছাকাছি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এদের দখলে।

দ্বিতীয় বছর আমি যখন ক্যালিফোর্নিয়া ফেরত যাচ্ছিলাম তখন এই চিন্তা আমার মাথায় আসে যে, স্রষ্টা কেনো তাদেরকে এই বিশেষ ক্ষমতা(বুদ্ধিমত্তা) দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন? এটা কি নিতান্তই কোনো কাকতালীয় ব্যাপার নাকি ব্যাপারটা মনুষ্যসৃষ্ট? ফ্যাক্টরি থেকে যেমন বিভিন্ন জিনিস বানানো যায় তেমন করে কি বুদ্ধিমান ইহুদী বানানো সম্ভব? সকল তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে সংগ্রহ করে আমার গবেষনা শেষ করতে প্রায় আট বছর সময় লেগে যায়, যেমন তাদের খাদ্যাভাস, সংস্কৃতি, ধর্ম, গর্ভাবস্থার প্রস্তুতি ইত্যাদি এবং পরবর্তীতে এসব আমি অন্যান্য জাতির সাথে তুলনা করবো।

প্রথমেই শুরু করা যাক মহিলাদের গর্ভাবস্থার প্রাক প্রস্তুতি দিয়ে। ইসরাইলে প্রথমেই যে জিনিসটা আমার নজড়ে আসে সেটা হচ্ছে গর্ভবতী মায়েরা সবসময় গান বাজনা এবং পিয়ানো বাজাবে এবং তাদের স্বামীদেরকে নিয়ে গনিতের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবে। গর্ভবতী মহিলারা সবসময় তাদের সাথে গনিতের বই সাথে নিয়ে ঘুরে যেটা দেখে আমি সত্যিকার অর্থেই খুব আশ্চার্যিত হয়েছিলাম। এমনকি আমি নিজেও কয়েকবার তাদের গনিতের সমস্যা সমাধান করে দিয়েছিলাম। আমি একবার একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এটা কি তুমি তোমার গর্ভের সন্তানের জন্য করছো? তখন সে উত্তর দিয়েছিলো হ্যাঁ। এটা আমরা করি যাতে শিশু গর্ভে থাকা অবস্থা থেকেই প্রশিক্ষন নিতে পারে এবং পরবর্তীতে জন্মের পর আরো বেশি মেধাবী হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। বাচ্চা প্রসবের আগ পর্যন্ত তারা তাদের এই গানিতিক সমস্যার সমাধান চালিয়ে যায়।

এর পরেই যে জিনিসটি আমি পর্যবেক্ষন করি সেটি হচ্ছে তাদের খাদ্যাভাস। গর্ভবতী মায়েরা আলমন্ড, খেজুর়, আর দুধ খেতে খুব ভালোবাসে। দুপুরের খাবারের তালিকায় থাকে রুটি এবং মাছ(মাথা ছাড়া), আলমন্ড এবং অন্যান্য বাদামযুক্ত সালাদ। তারা বিশ্বাস করে যে মাছ হচ্ছে মস্তিষ্কে পুষ্টি সরবরাহ করে অপর দিকে মাছের মাথা মস্তিষ্কের জন্য খারাপ। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের কড লিভার খাওয়া ইহুদী সংস্কৃতির একটি অংশ।

আমি যখন রাতের খাবারের দাওয়াতে অংশ নিতাম তখন দেখতাম তারা সবসময় মাছ খেতে খুব পছন্দ করত এবং মাংশ পরিত্যাগ করত। তাদের বিশ্বাসমতে মাছ এবং মাংস দুটি একসাথে খেলে তা শরীরের কোনো কাজে লাগে না। অপর দিকে সালাদ এবং বাদাম তাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই থাকবে, বিশেষ করে আলমন্ড। তারা যে কোনো প্রধান আহারের আগে ফল খাবে। তারা বিশ্বাস করে যে যদি প্রধান আহারের পরে ফল খাওয়া হয় তবে তা নিদ্রার উদ্রেগ ঘটাবে যা পাঠ গ্রহনের ক্ষেত্রে বাধার কারন হয়ে দাড়াবে।

ইসরাইলে ধুমপান করা নিষিদ্ধ। যদি আপনি তাদের বাসার অতিথি হয়ে থাকেন তবে বাসার ভিতরে ধুমপান করা থেকে বিরত থাকবেন নাহলে তারা খুব বিনিতভাবে তাদের বাসার বাইরে গিয়ে ধুমপান করবার অনুরোধ জানাবে। ইসরাইলী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের মতে, ধুমপান মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংশ করে দেয় এবং শরীরের জ্বীন এবং ডিএনএ কে ক্ষতিগ্রস্থ করে ফলে বংশপরম্পরায় ত্রুটিযুক্ত মস্তিষ্কের কোষযুক্ত বাচ্চা জন্মগ্রহন করবে।(এখানে একটা জিনিস খেয়াল করবেন যে, পৃথিবীর বড় বড় সব সিগেরেটের কম্পানিগুলো ইহুদীদের সেটা আপনারা আশা করি ভালো করেই জানেন…..)

বাচ্চারা কি খাবার খাবে সেটা সবসময় তাদের পিতামাতা ঠিক করে দেয়। প্রথমে ফল খাবে এরপর প্রধান খাবার খাবে। যেমন রুটি মাছ এর পর কড লিভারের তেল খাবে। আমার দেখা মতে প্রত্যেকটি ইহুদী বাচ্চারই সাধারনত তিনটি ভাষার উপর দখল থাকে – হিব্রু, আরবী এবং ইংরেজী। শিশুকাল থেকেই প্রত্যেকটি বাচ্চাকে ভায়োলিন এবং পিয়ানো বাজানোর প্রশিক্ষন দেওয়া হয়।

তারা বিশ্বাস করে এতে করে তাদের আইকিউ লেভেল এর বৃদ্ধি ঘটে এবং বাচ্চারা মেধাবী হয়ে বেড়ে উঠে। জিউস বিজ্ঞানীদের মতে, সঙ্গীতের কম্পন মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উদ্দীপিত করে। একারনেই ইহুদীদের মাঝে এত মেধাবী মানুষ দেখা যায়। ক্লাশ এক থেকে ছয় পর্যন্ত তাদেরকে গনিত এবং ব্যাবসা শিক্ষা শিখানো হয়। বিজ্ঞান তাদের এক নম্বর পছন্দের বিষয়। ইহুদি বাচ্চারা কিছু বিশেষ ক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে যেমন, দৌড়, ধনুবিদ্যা এবং শুটিং। তারা মনে করে শুটিং এবং ধনুবিদ্যা তাদের মস্তিষ্ক্যকে সঠিক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সাহায্য করে।

উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শিক্ষার উপর বিশেষ জোড় প্রদান করা হয়। এসময় তারা বিভিন্ন জিনিস বানানোর চেষ্টা করে থাকে এর মধ্যে সব ধরনের প্রজেক্ট থাকে। যদিও তাদের বানানো কিছু কিছু জিনিস অনেক হাস্যকর এবং ব্যবহার অযোগ্য লাগতে পারে। কিন্তু সব কিছুতে গুরুত্বের সাথে মনোযোগ দেওয়া হয় বিশেষ করে যদি সেটা হয় যুদ্ধোপকরন, ঔষধ কিংবা যন্ত্রবিজ্ঞান। যে সকল প্রকল্প বা ধারনাগুলো সফলতা পায় সেগুলোকে উচ্চবিদ্যাপিঠগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আরো ভালো ভাবে গবেষনা করবার জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছরে ব্যাবসা শিক্ষা অনুষদকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যাবসা শিক্ষার সকল ছাত্র ছাত্রীদের একটি করে প্রজেক্ট দেওয়া হয় এবং তারা শুধু মাত্র পাস করতে পারবে যদি তাদের গ্রুপ (প্রতি গ্রুপে আনুমানিক ১০জন) সেই প্রজেক্ট থেকে ইউএসডি এক মিলিয়ন ডলার লাভ করতে পারে। অবাক হওয়ার কিছুই নেই, এটাই বাস্তবতা। এবং এই কারনে পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইহুদীদের দখলে।

আপনারা কি কখনো ইহুদীদের প্রার্থনা করতে দেখেছেন?

তারা প্রার্থনা করবার সময় সবসময় তাদের মাথা ঝাঁকায়। তারা বিশ্বাস করে তাদের এই কার্যকলাপ তাদের মস্তিষ্কে আরো অধিক পরিমান অক্সিজেন সরবরাহ করে। ( একই জিনিস ইসলাম ধর্মেও দেখা যায়- তারা নামাজের রাকাতের শেষে সালাম ফিরাবার সময় মাথা ডানে এবং বামে ঘুরায়।) জাপানিজদের দেখলেও দেখতে পাবেন যে তারা তাদের একজন আরেকজনের সাথে দেখা হলে মাথা নামিয়ে সম্মান করে এবং এটা তাদের সংস্কৃতির অংশ। আর জাপানীদের মাঝেও অনেক মেধাবী দেখা যায়। জাপানি শুশী(তাজা মাছ) খেতে অনেক পছন্দ করে। আপনার কি মনে হয় মাথা নাড়ানো এবং মাছ খাওয়ার ব্যাপারটা কাকতালীয় কোনো ব্যাপার?

আমেরিকায় ইহুদীদের বানিজ্যিক কেন্দ্র নিউইয়র্কে অবস্থিত যেখান থেকে তাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হয়। যদি কোনো ইহুদী ব্যাক্তির লাভজনক কোনো আইডিয়া থাকে তাহলে সেই বানিজ্যিক কেন্দ্র হতে সুদবিহীন মূলধনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় এবং সেটাকে সফল করতে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করে থাকে। একই ভাবে জিউস কম্পানিতে যেমন – স্টারবাক্স, লিভাইস,হলিউড, ওরাকল, কোকাকোলা, ডানকিন ডোনাটসহ যে সকল প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের ফ্রী স্পন্সরশীপ দেওয়া হয়। নিউইয়র্কে ডাক্তারী পাস করে যে সকল ছাত্রছাত্রী বের হয় তাদেরকে এই বানিজ্যিক কেন্দ্রের আওতায় নিবন্ধন করে বেসরকারী ভাবে প্র‍্যাকটিস করতে সুদবিহীন লোনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখন আমি বুজতে পারছি কেনো নিউইয়র্ক এবং কেলিফোর্নিয়ায় স্প্যাশালিস্ট ডাক্তারের এত অভাব।

আমি আগেও বলেছি ধূমপানের কারনে বংশপরম্পরায় বোকা/গর্ধব এক প্রজন্ম বেড়ে উঠে। ২০০৫ সালে আমি যখন সিঙ্গাপুর ভ্রমন করেছিলাম সেখানেও আমি অবাক হয়ে দেখেছিলাম ধুমপায়ীরা সমাজ থেকে বিতারিত এবং এক প্যাকেট সিগেরেটের দাম ইউএস সাত ডলার। ইসরাইলের মতই ধূমপান সেখানে প্রায় নিষিদ্ধ। সিঙ্গাপুরের সরকার ব্যবস্থা অনেকটা ইসরাইলের মতো। আর এ কারনেই সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক উচ্চমানের। যদিও দেশটির আয়তন কেবল মাত্র আমেরিকার ম্যানহাটন শহরের সমান।

এবার একটু ইন্দোনেশিয়া দেশটার দিকে তাঁকান। সেখানে মোটামুটি সবাই ধুমপান করে। এক প্যাকেট সিগেরেটের দাম খুবই সস্তা, মাত্র ইউএসডি ০.৭ সেন্টস। ফলাফল জনসংখ্যার খুব কম সংখ্যক মানুষ মেধাবী! দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আপনি হাতে গুনে বলে দিতে পারবেন, এমন কোনো কিছু তারা উৎপন্ন করে না যা নিয়ে তারা গর্ব করতে পারে, নিচু মানের প্রযুক্তি, এমনকি তারা তাদের নিজেদের ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় কথাও বলতে পারে না। যেমনঃ তাদের দেশের মানুষদের জন্য ইংরেজীতে ভালো দখল নেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আর এর কারন হচ্ছে ধূমপান করা, বাজে খাদ্যাভাস এবং তাদের সংস্কৃতি।

আমার এই গবেষনায়, আমি ধর্ম এবং জাতি মূল বিষয় বস্তু ছিলো না। কেনো ইহুদীরা এত অহংকারি আর কেনই বা ফেরাউনের সময় থেকে শুরু করে হিটলারের সময় পর্যন্ত এত নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। আমার মতে বিষয়টা রাজনৈতিক এবং টিকে থাকার অদম্য বাসনা।

আমার এই গবেষনার মূল বক্তব্য ছিলো –

আমরা কি ইহুদীদের মতন এমন একটা বুদ্ধিমান প্রজন্ম তৈরী করতে পারবো?

উত্তর হ্যাঁ হতে পারে।
কিন্তু এর জন্য আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে আমাদের বাচ্চা লালন পালনের পদ্ধতিকে। তাহলেই হয়ত তিন প্রজন্ম পর এটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো।

আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন এবং মানবজাতির কল্যানের জন্য একটি বুদ্ধিমান প্রজন্ম গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন, সে আপনি যেই হয়ে থাকেন না কেনো।

  • ইয়াবার অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব একমাত্র যদি সরকারের সদিচ্ছা থাকে তাহলে।
  • ধুমপান আইন করে বন্ধ করা সম্ভব না। যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে সিগারেটের উপর শুল্ক বাড়িয়ে দিয়ে দাম বাড়াতে হবে।
  • বর্তমানে সবচেয়ে বড় যে সমস্যা সেটার নাম হচ্ছে প্রশ্ন পত্র ফাস! এটা পুরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি পড়ার জন্য। কোন মন্তব্য থাকলে জানাবেন প্লিজ।

2 Comments

  1. আমরা মুসলিম রা ইহুদি দের মতো কিংবা তার চেয়েও সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান প্রজন্মের জন্ম দিতে চায় যাতে পরবর্তি মুসলমান প্রজন্ম যাতে ইহুদী জাতি থেকে সবদিক থেকে উপযুক্ত ও এগিয়ে থাকে ইনশাআল্লাহ আমিন সুম্মা আমীন আল্লাহুম্মা আমিন 🖤🖤❤️❤️🤍🌼
    🇪🇭🇪🇭🇯🇴🇯🇴🇪🇭🇪🇭🇪🇭🇪🇭🇯🇴🇪🇭🇪🇭🇪🇭🇪🇭ফিলিস্তিন যাতে করে পৃথিবীতে রাজ করে

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post